ব্যাপল ইমেজ সঙ্কটে আরব আমিরাত!

কাতারের ওপর আরোপিত অবরোধের নিয়ে সংযুক্তরা আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে আন্তর্জাতিক আদালত। অবরোধের মাধ্যমে আরব আমিরাতের সাধারণ মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কাতারের পক্ষ থেকে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার এ রুল জারি করেছেন ওই আদালতের এক বিচারক।

২০১৭ সারের জুন মাসে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর কাতারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে। অবরোধের পর এক বছর পার হলেও দুই পক্ষের কেউই নিজেদের অবস্থান থেকে সরেনি।

আমিরাতের যুবরাজের কাতারে পলায়ন

আবুধাবির শাসককের সমালোচনা করেছিলেন ৩১ বছর বয়সী যুবরাজ শেখ রশিদ বিন হামাদ আল-শারকি। জীবন হুমকির মুখে এই আশঙ্কায় তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে পালিয়ে কাতারে আশ্রয় নিয়েছেন। আল ফুজাইরার শাসকের দ্বিতীয় ছেলে তিনি।

শেখ রশিদ আমিরাতের শাসকের বিরুদ্ধে ব্ল্যাকমেল এবং মানি লন্ডারিং-এর অভিযোগ আনেন। কিন্তু তার দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তিনি। ইয়েমেনের যুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সৈন্যদের নিয়ে আমিরাতের শাসকদের মধ্যে উত্তেজনা সম্পর্কেও মন্তব্য করেন তিনি।

শেখ রশিদ বলেছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে একশ’ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে ফুজাইরাতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বেশি।

একজন কর্মকর্তা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। আরব আমিরাতের ৪৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো যুবরাজ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ আনল।

আমিরাত রাজপরিবারে বিরোধ!

কাতারে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া প্রিন্স শেখ রশিদ বিন হামাদ আল-শারকি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শাসকদের মধ্যকার বিভিন্ন বিরোধ ও অভ্যন্তরীণ কর্মকাণ্ড নিয়ে মুখ খুলেছেন। কাতারে প্রিন্স রশিদের আশ্রয় নেয়া মুখ খোলার ঘটনায় উপসাগরীয় সঙ্কট আরো জটিলতর হয়ে উঠছে। ৩১ বছরের প্রিন্স শেখ রশিদ আরব আমিরাতের অপেক্ষাকৃত ছোট ও কম বিত্তশালী রাজতন্ত্র ফুজাইরার আমিরের দ্বিতীয় ছেলে। কাতারে আশ্রয় নেয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ফুজাইরা সরকারের মিডিয়া দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন। ১৬ মে ভোরে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে দোহা বিমানবন্দরে অবতরণ করে রাজনৈতিক আশ্রয় চান।

কাতারি কর্মকর্তাদের প্রিন্স রশিদ জানান, আবুধাবির শাসকদের সাথে বিরোধের কারণে তিনি জীবনের ঝুঁকির আশঙ্কা করছেন। শেখ রশিদ ও কাতারি এক কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওয়াশিংটনে অবস্থিত আমিরাতি দূতাবাসের একজন প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ফুজাইরার শাসকদের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

প্রিন্স রশিদের কাতারে আশ্রয় নেয়ার ঘটনাটি আরব আমিরাতের গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ঘটল। এই প্রথম আমিরাতের সাতটি রাজপরিবারের শাসকদের বিরুদ্ধে রাজ পরিবারের সদস্যই মুখ খুললেন। এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স রশিদ দাবি করেন, আমিরাতি শাসকেরা ব্ল্যাকমেইল ও অর্থ পাচার করছে। যদিও এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।